তুর্কমেনিস্তানে করোনা আক্রান্ত নেই কেন?


নিউজ ডেস্ক: প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২০, ০৫:৩১ পিএম
তুর্কমেনিস্তানে করোনা আক্রান্ত নেই কেন?

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ছোবলে যখন বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে তখন নিরপেক্ষ রাষ্ট্র তুর্কমেনিস্তান দাবি করছে, সে দেশে করোনাভাইরাসের একটা সংক্রমণও ধরা পড়েনি। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, দেশটির সরকার তথ্য গোপন করছে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ লকডাউনসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তুর্কমেনিস্তানের জনজীবন চলছে স্বাভাবিক গতিতে। শিক্ষাঙ্গন, খেলার মাঠ, দোকানপাট, ক্যাফে, রেস্টুরেন্ট- সবকিছুই খোলা রাখা হয়েছে। বিয়ের অনুষ্ঠানের মতো বড় বড় জনসমাগম হয় এমন ধরনের অনুষ্ঠানও হচ্ছে প্রতিদিন।

করোনাভাইরাসে কারণে নিউইয়র্কে যখন এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা তখন বিশ্বের সাদা শহর খ্যাত তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশখাবাদে ৭ এপ্রিল, মঙ্গলবার ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস’ উদযাপনের জন্য আয়োজন করা হয়েছে গণ সাইকেল র‍্যালির। তাহলে কি আসোলেই তুর্কমেনিস্তানে কেউ করোনা আক্রান্ত নয়?

লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের অধ্যাপক মার্টিন ম্যাককি বলেন, 'তুর্কমেনিস্তানের সরকার স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যেসব তথ্য প্রকাশ করে, সেগুলোর একেবারেই বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। গত এক দশক ধরে ওরা দাবি করে যাচ্ছে সেদেশে নাকি কোন এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত মানুষ নেই। এটা মোটেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। আমরা এটাও ভালো করেই জানি এই শতকের প্রথম দশকে সেদেশে প্লেগ থেকে শুরু করে অনেক রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে।'

করোনা সংক্রমণের কথা অস্বীকার করলেও তুর্কমেনিস্তানের কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছেন। জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থাগুলোর সঙ্গে মিলে তারা একটি পরিকল্পনাও তৈরি করছেন।

তুর্কমেনিস্তানে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক এলেনা পানোভা বিবিসিকে বলেন, এই পরিকল্পনায় দেশটির সব পর্যায়ে সমন্বয়, ঝুঁকি সম্পর্কে জনগণকে সতর্ক করা, প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করা- সব ব্যবস্থার কথাই আছে।

জাতিসংঘের এই কর্মকর্তার কাছে বিবিসি জানতে চেয়েছিল, তুর্কমেনিস্তানে কোনো কোভিড-নাইনটিন সংক্রমণ হয়নি বলে সরকার যে দাবি করছে, সেটা তারা কতটা বিশ্বাস করেন।

এমন প্রশ্নের জবাবে এলেনা পানোভা বলেন, আমরা সরকারের দেওয়া তথ্যের ওপরই নির্ভর করি। কারণ সব দেশ এভাবেই তথ্য দেয়। এখানে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের কোনো ব্যাপার নেই, কারণ এভাবেই পুরো বিষয়টি কাজ করে।

এলেনা পানোভা বলেন, মানুষের চলাফেরা সীমাবদ্ধ রাখার জন্য শুরুতে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল তার ফলেই হয়তো এখানে কোনো সংক্রমণ এখনো পাওয়া যায়নি।  

স্থলবেষ্টিত দেশ তুর্কমেনিস্তান প্রায় এক মাস আগে তাদের স্থল সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল। ফেব্রুয়ারির শুরুতে চীন এবং অন্য কিছু দেশের সঙ্গে ফ্লাইট চলাচলও বন্ধ করে দেয়। সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবতরণের জন্য রাজধানীর পরিবর্তে পাঠিয়ে দেওয়া হয় উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর তুর্কমেনাবাটে। সেখানে একটি কোয়ারেন্টিন জোনও তৈরি করা হয়।

গো নিউজ২৪/আই

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর